শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি:
ভোলা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করিনা। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সীমাহীন অত্যাচার নির্যাতনের মধ্য দিয়ে ভোলাসহ সারা দেশের রাজনীতিতে প্রতিহিংসার যে বীজ বপন করেছিল আওয়ামী লীগ তার মূল উৎপাটন করেছে। ভোলায় গত ১০ বছর আমরা ক্ষমতায় থেকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছি। এখানে এখন পর্যন্ত কোন নির্বাচনী সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। গতকাল বুধবার ভোলার দক্ষিণ দিঘলদী ও ইলিশা, রাজাপুরসহ বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত পথ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তোফায়েল আহমদে আরও বলেন, গত ১০ বছর ভোলার বিএনপি নেতাকর্মীরা শান্তিতে ছিল। এখনো আছে। ২০০১ সালে তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে থাকতে দেয় নি। গুরু, ছাগল, হাস মুরগি থেকে শুরু করে পুকুরের মাছ, বাগানের গাছ কেটে নিয়েছে। মানুষের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে।
আমার বাড়িতেও হামলা করে ভাংচুর করেছে। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় এসে সেগুলোর প্রতিশোধ নেই নি। আমাদের দ্বারা কেউ অত্যাচারিত হয়নি। কারণ আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। ভোলায় গত ১০ বছরে ভোলায় বিএনপির বিরুদ্ধে যে দুই একটি মামলা হয়েছে তাও বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও পুলিশের গাড়িতে বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলা দিয়েছে। এই বিএনপি তাদের ক্ষমতার আমলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকেও ভোলায় জনসভা করতে দেয়নি।
মরিচের গুড়া মেরে আমার জনসভা নষ্ট করার মত ন্যাক্কার জনক ঘটনাও ঘটিয়েছি। মানুষের গড়– পুড়িয়ে দেয়া, গাভীন গরু খেয়ে ফেলা এমনকি আমার বাসা বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেও ভাংচুর করেছিল। আমার নির্বাচনী এলাকা বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখানে হাফিজ ইব্রাহিমের লেলিয়ে দেয়া গু-াবাহীনি আমার গাড়ি আক্রমণ করে বোমা মেরে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে আমাকে প্রতিহত করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি থামি নাই। আমি এলাকার মানুষের জন্য রাজনীতি করি।
শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সে দিন আমি জীবনের ঝুকি নিয়ে মানুষের কাছে গিয়েছি। এখন বিএনপির যারা প্রার্থী তারা গত ১০ বছর এলাকার মানুষের সাথে কোন সম্পার্ক রাখেনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মেজর হাফিজ লালমোহন তজুমদ্দিনে যে সীমাহীন অত্যাচার করেছে সে সেব অত্যাচারের কথা মনে করে আজও মানুষ আঁতকে ওঠে। তার সামনে গরুর খুটা দিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী আব্দুল মালেকের দুটি চোখ উপড়ে দিয়েছিল তার ক্যাডার বাহিনী। লর্ডহার্ডিঞ্জের সংখ্যালঘুদের উপর সেদিন বর্বরোচিত যে নির্যাতন হয়েছিল তা আন্তর্জাতিক মহলকেও নাড়া দিয়েছিল। হাফিজের ক্যাডারদের ভয়ে মা বোনেরা বিলের পানির মধ্যে নেমে পালিয়েছিল। কিন্তু তারপরও তারা সম্ভম রক্ষা করতে পারেনি। বাংলাবাজারে উচ্চশিক্ষিত আওয়ামী লীগ নেতা নাসির মাস্টারকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিল। হাফিজ ইব্রাহিম ঘোষণা দিয়েছিল একজন আওয়ামী লীগ কর্মীকে মারলে এক টন এবং একজন আওয়মী লীগ নেতাকে মারতে পারলে ২ টন গম বরাদ্দ দেয়া হবে। এভাবেই তারা সে সময় ভোলার বিভিন্ন উপজেলা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করায় হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বছরের পর বছর বাড়িঘর স্ত্রী সন্তানদের ছেড়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছিল। আজ যখন ১০ বছর পর বিএনপির সেইসব অত্যাচারী নেতারা ভোট করতে এলাকায় এসেছেন তখন নির্যাতনের শিকার সেসব মানুষ তাদেরকে প্রশ্ন করে। সেই ভয়ে তারা এখন মানুষের কাছে যেতে সাহস পাচ্ছে না।
এ সময় তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি সাধারণ মানুষের উপর যে অত্যাচার নির্যাতন করেছে মানুষ তা এখনো ভোলেনি। তাই আজ সাধারণ মানুষ তাদের সাথে নেই। তাদের নেতাকর্মীরাও আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে যে গণজোয়ার দেখেছিলাম এবারও দেশব্যাপী সেই গণজোয়ার বইছে। গ্রাম গঞ্জে যেখানেই আওয়ামী লীগের পথসভা হয় সেখানেই হাজার হাজার মানুষের গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। কারণ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশব্যাপী উন্নয়নের অগ্রযাতায় মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। মানুষ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য আবারও আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবে।
বিভিন্ন স্থানের পথসভায় তোফায়েল আহমেদের সাথে ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন টুলু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারেফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল হোসেন বিপ্লব প্রমূখ।
Leave a Reply